অনেকের চুল আঁচড়ানোর সময় চুল পড়া থেকে চুল ভেঙ্গে এবং ছিঁড়ে আসছে বেশি। এছাড়া বাইরে খোলা চুলে গেলে, যখন বাসায় ফিরে আসছেন তখন অনেকের চুলগুলো পাটের আঁশের মতো হয়ে যায়। আর চিরুনি চালাতে গেলেই অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। কারণ চুলে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার না লাগালে অনেকসময় এরকম হতে পারে। আজ প্রথমে চুল ভাঙ্গা এবং ছিঁড়ে যাওয়ার কিছু কারণ জেনে নেই। তারপরেই না হয় সমাধানে আসি।
1.চুলে অপ্টিমাল হাইড্রেশনের অভাব পড়লেই চুল দুর্বল হয়ে ভেঙে যায়। এজন্য প্রথমেই দরকার চুলের জন্যে একরাশ ভালবাসা। কারণ, প্রপার কেয়ার-এর মাধ্যমেই সুন্দর এবং হেলদি চুল পাওয়া সম্ভব। আর এজন্য বেসিক হেয়ার কেয়ার রুটিন কিন্তু একদম ঠিকঠাকভাবে মেনে চলা উচিত। চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। এই কমন কথা বার বার বলতে হয়। কারণ, কমন ব্যাপারগুলোই অনেকে ভুলে যান। শ্যাম্পু লাগালেন তো, কন্ডিশনার লাগালেন না!!!
2.চুল ভাঙার আরেকটি কমন কারণ হলো হার্ড ওয়াটার। পানির কারণে অনেকেরই চুল পড়া এবং ভেঙে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, হার্ড ওয়াটার-এ ক্লোরিন এবং হেভি মেটাল থাকার ফলে তা চুলের কিউটিকল ড্যামেজ করে দেয়। ফলাফল- চুল ভাঙা। এক্ষেত্রে ‘শাওয়ার হেড ফিল্টার’ আপনার একমাত্র বন্ধু হতে পারে। এটি পানি থেকে ক্ষতিকারক মেটাল ফিল্টার করে দেয়।
3.চুলে স্টাইল করতে কে না পছন্দ করে। চুল স্ট্রেইট, কার্ল, পার্ম ইত্যাদি করতে চুলে প্রচুর হিট দেয়া হয়। যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভাল নয়। এর ফলে প্রচুর চুল ভাঙা শুরু হয়। তাই চুলে যতটা সম্ভব হিট কম ব্যবহার করুন। একান্তই যদি প্রয়োজন পরে তবে, অবশ্যই প্রথমে হিট প্রোটেক্টর স্প্রে চুলে লাগিয়ে নিন। এতে করে হিটের ক্ষতি থেকে চুল বেঁচে যাবে।
4.আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, গোসলের পর চুলের পানি ঝরাতে টাওয়াল দিয়ে ইচ্ছা মতো চুল ঘষতে থাকেন। এই ইচ্ছা মতো ঘষার ফলে যে চুলটা নষ্ট করে ফেলছেন, তা জানেন কি? চুল ভাঙ্গার পেছনে এটাও একটা কারণ। সবসময় আলতো করে চেপে চুলের পানি শুষে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। টাওয়েলের পরিবর্তে পুরনো টি শার্ট ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে। আর হেয়ার ড্রায়ার থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা যায় ততই ভাল।
5.চুল আঁচড়ানোর পদ্ধতিটা কি আপনার? চুল সুন্দর, জটহীন রাখতে চুল আঁচড়ানো বা কোম্ব করাকে সব থেকে গুরুত্ব দিন। অনেকেই বলে থাকেন, চুল আঁচড়াতে গেলেই খুব চুল ভেঙে যায়। এর কারণ আছে। আপনি নিশ্চই চুল গোড়ার দিক থেকে আঁচড়ানো শুরু করেন। যার ফলে, উপর থেকে জটাগুলো চুলের আগা পর্যন্ত যেতে থাকে। আর শেষমেশ, নিচের সব জটাগুলো একসঙ্গে ছাড়িয়ে নিতে গিয়েই বাঁধে বিপত্তি। চুল ভাঙতে এবং ছিঁড়তে থাকে। এজন্যে, চুল সব সময় আগার দিক থেকে শুরু করে আস্তে আস্তে আঁচড়ে উপরের দিকে উঠতে হবে। এতে খুব বেশি জটা জমা হবে না এবং চুলও ভাঙবে/ছিঁড়বে কম।
6.চুলের স্টাইল মানেই চুলে টিজ করে চুলটা একটু ফোলানো। দেখতে সুন্দরই লাগে। কিন্তু মানেন আর না মানেন, টিজ করা চুল দেখতে সুন্দর লাগলেও যখন টিজ করা চুলগুলো খুলতে যাবেন তখন কিন্তু প্রচুর চুল ছিঁড়বে এবং ভাঙবেই। আজকাল তো মার্কেটে চুল টিজ না করেও ফোলানোর অনেক এক্সেসরিজ আছে। চাইলে, সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এতে, চুলও ভাল থাকল, স্টাইলও হলো!
এবার চলুন জেনে নেই হেলদি চুলের জন্যে কী কী করতে হবে।
–চুলে শ্যাম্পুর চেয়ে কন্ডিশনার বেশি ব্যবহার করবেন। ডাবল কন্ডিশনিং এক্ষেত্রে ভাল কাজে দেবে। কিন্তু শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার অবশ্যই জেন্টলি ব্যবহার করতে হবে।
– চুল ব্লো ড্রাই-এর দরকার পড়লে কুলিং সেটিং এ ব্যবহার করুন।
–চুলে হেয়ার এক্সটেনশন ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন তা যেন লাইট হয়।
–চুলে কোকোনাট অয়েল দেয়া বাদ দেওয়া যাবে না। সপ্তাহে ২-৩ দিন চুলে তেল দেওয়া কিন্তু মাস্ট।
–এছাড়া নিজের ডায়েটের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।