শীত যেমন মজার সব খাবার নিয়ে আসে, তেমনি এনে দেয় ওজন কমানোর মতো কিছু খাদ্য উপাদানও।
টমেটো :
টমেটো একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। শীতকালীন এই সবজিটি যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, ঠিক একইভাবে রান্না করে খাওয়া যায়। শরীরকে সুস্থ-সবল রাখতে টমেটোর ভূমিকা অতুলনীয়। এটা অত্যন্ত নিু ক্যালরিযুক্ত। ছোট একটি টমেটোতে ১৬ ক্যালরি থাকে। এটা উচ্চ দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় দুই রকম আঁশ সমৃদ্ধ, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ফুলকপি আর ব্রুকলি :
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর বিভিন্ন খনিজ পদার্থ ও ভিটামিনের পাশাপাশি ব্রুকলি ও ফুলকপিতে রয়েছে ফটো কেমিক্যাল, যা চর্বি জমতে দেয় না শরীরে। ফুলকপি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কেননা লো ক্যালোরি খাবার হওয়ার পাশাপাশি এতে ফাইবারও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।
বাঁধাকপি :
পুষ্টিগুণের পাশাপাশি বাঁধাকপির রয়েছে নানা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও। সালাদে শসা, গাজর, টমেটোর সঙ্গে কচি বাঁধাকপি মেশালে তার স্বাদ হয় অত্যন্ত চমৎকার, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। যারা ওজন কমাতে চান তারা তাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বাঁধাকপি রাখুন।
পালং শাক :
এক কাপ পালং শাক খাদ্য আঁশের দৈনিক চাহিদার ২০% পূরণ করার সঙ্গে সঙ্গে ভিটামিন এ ও কে-এর দৈনিক চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। সুতরাং বুঝতেই পারছেন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য এর গুরুত্ব কতটা।
শসা :
শসায় রয়েছে ডিটক্সিফিকেশন গুণ। ফাইবার আর পানির পরিমাণ বেশি থাকায় বারবার ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমায় এ সবজি। দুপুরের খাবারে প্রতিদিন শসা রাখতেই পারেন। এটি ওজন কমাতে টনিকের মতো কাজ করে।
গাজর :
গাজরে রয়েছে থায়ামিন, নিয়াসিন, ভিটামিন বি৬, ফলেইট এবং ম্যাঙ্গানিজ, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও আরও আছে ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম। গাজরের মধ্যে থাকা ফাইবার আর নিউট্রিয়েন্ট মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। তাই আপনার খাবার মেন্যুতে প্রতিদিন সালাদ বা সবজি হিসেবে গাজর রাখুন।
শালগম :
শালগমে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং ভিটামিন কে। এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে অথচ ক্যালরির পরিমাণ থাকে খুবই কম। ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে কোলেস্টেরলের সমস্যা জড়িত। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে তারা শালগম খেয়ে উপকৃত হতে পারেন। এর কারণ শালগম পাকস্থলীতে অনেক বেশি পিত্তরস শোষণ করতে পারে, যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এভাবেই কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে শালগম।
অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করা একটি জটিল বিষয়। আপাতদৃষ্টিতে এটি খুব সহজ কাজ মনে হলেও এর জন্য প্রয়োজন অসীম ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাস। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রতিদিন করতে হবে ব্যায়ামও। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত ঘুম, আর প্রচুর পানি পান করুন। মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন একই সঙ্গে।
ডা. আলমগীর মতি
হারবাল গবেষক ও চিকিৎসক
মডার্ন হারবাল গ্রুপ, ঢাকা।
দৈনিক যুগান্তর ,১৪ নভেম্বর ২০১৮