শারীরিক সম্পর্ক শুধু দাম্পত্যের জন্যই নয়, আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।লাইফস্টাইল ওয়েবসাইট ব্রাইডসকে সেক্স থেরাপিস্ট সারি কুপার জানান, শারীরিক সম্পর্কের মাধ্যমে স্ট্রেস কমে এবং আরেকজন মানুষের সাথে আমাদের অনুভূতি আদানপ্রদান হয়।শুধু তাই নয়, যৌন সম্পর্ক হৃত্পিণ্ডের জন্য খুবই ভালো একটি ব্যায়াম। এতে অনেকটা ক্যালোরি ক্ষয় হয়। এছাড়া এ সময়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে, মাথাব্যথা দূর হয় এবং বিষণ্ণতার উপসর্গগুলো দূর হয়।
লম্বা সময়ের দাম্পত্যে অনেক সময়েই দুজন বা একজনের মাঝে শারীরিক সম্পর্কের প্রতি অনীহা দেখা যায়। বিভিন্ন কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শারীরিক সম্পর্কে ভাটা পড়ে। তখন কি শরীরের কোনো ক্ষতি হয়?
কুপার জানান, অনেকে নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক ছাড়াও ভালো থাকে সারাজীবন। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্কের অভাবে স্ট্রেস থেকে অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। হ্যাঁ, শারীরিক সম্পর্ক কিছু সময়ের জন্য বন্ধ থাকলে হুট করে আপনার ওজন বেড়ে যাবে না, বা হৃদরোগ দেখা দেবে না। কিন্তু এ পরিবর্তনগুলো আসতে পারে-
১.শারীরিক সম্পর্কের ইচ্ছা বাড়তে বা কমতে পারে:
অনেকে স্বাস্থ্যগত কারণে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে পারেন। কিন্তু বিবাহ বিচ্ছেদ বা সঙ্গীর অনিচ্ছার কারণে শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ থাকলে এর ইচ্ছা বাড়তে বা কমতে পারে। কেউ কেউ আগের চাইতে নিরুত্তাপ হয়ে পড়েন, যৌনতার ইচ্ছা ক্রমশ কমে যেতে পারে। কিন্তু শারীরিক সম্পর্কে অভাবেই আবার কেউ তা বেশি কামনা করতে পারেন।
২.মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারেন:
সারি কুপারের মতে, শারীরিক সম্পর্কের সময়ে দুজন মানুষের মাঝে যে অন্তরঙ্গতা থাকে, তা একে অপরের মেজাজা ভালো রাখতে সাহায্য করে। কারণ এতে আমাদের শরীরে অক্সিটোসিন ও এন্ডরফিন হরমোন নিঃসৃত হয় এবং তা আমাদের মন ভালো করে। শারীরিক সম্পর্কের অভাবে তাই মেজাজ খারাপ থাকতে পারে। তবে তারমানে এই নয় যে গুরুতর কোনো মানসিক সমস্যা হবে।
৩.যৌনাঙ্গের দেয়ালে পরিবর্তন আসতে পারে:
এ সমস্যাটি দেখা দিতে পারে সেসব নারীর ক্ষেত্রে যারা প্রায় মেনোপজ হবার বয়সে পৌঁছে গিয়েছেন। এ বয়সে শারীরিক সম্পর্কের অভাবে যৌনাঙ্গের ভেতরের দিকের দেয়াল দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে কিছু সময় বন্ধ থাকার পর আবার শারীরিক সম্পর্কে ফেরত গেলে ব্যথা অনুভুত হতে পারে। শুধু তাই নয়, এ বয়সে শরীরে ইস্ট্রোজেনের অভাব হয় বলে লুব্রিকেশনও কম হয় ফলে শারীরিক সম্পর্ক আগের তুলনায় কঠিন ও কষ্টকর হতে পারে।
৪. সহজেই স্ট্রেসড হয়ে যেতে পারেন আপনি:
শারীরিক সম্পর্ক স্ট্রেস দূর করতে কার্যকরী। ফলে এর অভাবে আপনি সহজেই স্ট্রেসড হয়ে যেতে পারেন। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে তার উল্টোটাও হতে পারে। কিছু নারীর ক্ষেত্রে শারীরিক সম্পর্ক স্ট্রেস বাড়ার কারণ হয়। তাই শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকলে তাদের স্ট্রেস কমতে পারে।
৫.ঋতুস্রাবের সময়ে ব্যথা বেশি হতে পারে:
অনেকেই জানেন না, নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তবে এ ব্যাপারে খুব একটা গবেষণা হয়নি। ড. লরেন স্ট্রেইচার জানান, নারীর জরায়ু একটি পেশীর মতো, একে যত ব্যবহার করা হয়, তা তত ভালো কাজ করে। ফলে ঋতুস্রাবের ব্যথাও কম হয়। শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ করলে তাই এ ব্যথা বাড়তে পারে।
৬. বুদ্ধিমত্তায় পরিবর্তন আসতে পারে:
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড এবং দক্ষিণ কোরিয়ায় ইঁদুরের ওপর করা দুইটি গবেষণায় দেখা যায়, শারীরিক সম্পর্ক মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা এবং কোষের বৃদ্ধি দুটোই বাড়ায়। ফলে শারীরিক সম্পর্ক বন্ধ করে দিলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমতে পারে। তবে তা নিশ্চিত করে বলা যায় না।