খাদ্যে ভেজাল এ সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ভেজাল নেই কোথায় সেটিই এখন প্রশ্ন।
দৈনন্দিন রুটিনে প্রায় প্রতি পরিবারে অতিপ্রয়োজনীয় যে খাবারটি, সেটি হচ্ছে দুধ। আর এ দুধেও পড়েছে ভেজালের আগ্রাসন। তবে দুধে ভেজাল মিশছে বললে ভুল বলা হবে। পুরো দুধটাই ভেজাল দিয়ে তৈরি বলাই শ্রেয়।
কীভাবে তৈরি হয় ভেজাল দুধ?
সম্প্রতি ভেজাল দুধ হাতেকলমে তৈরি করে দেখিয়েছে ভারতের হলদিয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
অক্টোবর মাসে দুই ধাপে হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি কলেজের খাদ্যপ্রযুক্তি বিভাগ এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ফুড সায়েন্সটিস্টস অ্যান্ড টেকনোলজিস্টসের (ইন্ডিয়া) যৌথ উদ্যোগে খাদ্য সুরক্ষা সচেতনতা ক্যাম্প করে তারা।
সেখানে প্রায় ২৫০ শিক্ষার্থীর সামনে দুধে ভেজালের ভয়ঙ্কর দিকটি উপস্থাপন করা হয়। শিক্ষার্থীরা ভেজাল দুধ তৈরির পদ্ধতি দেখে বিস্মিত হন।
ভেজাল দুধ তৈরি হয় গুঁড়োদুধের সঙ্গে একাধিক উপকরণ মিশিয়ে। যে উপকরণগুলোর প্রায় সবটিই শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর।
হলদিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি কলেজছাত্রী বর্ণালি সাহার দাবি, গুঁড়োদুধের সঙ্গে ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু ইত্যাদি মিশিয়ে তৈরি করা হয় ভেজাল দুধ।
তিনি ৪০ মিলিলিটার গুঁড়োদুধের সঙ্গে ঘি, ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পুসহ অন্যান্য উপাদান এক মিলিলিটার করে মেশান। এভাবে তৈরি হয় ৩৫০ মিলিলিটার ভেজাল দুধ।
আরও জানুন ঃ যেসব খাবার সর্দি ও গলা ব্যথায় ক্ষতিকর
বিস্ময়ের ব্যাপার হল- এই ভেজাল দুধের সঙ্গে আসল দুধের কোনো পার্থক্য খুঁজে পায়নি শিক্ষার্থীরা। আসল দুধের সঙ্গে এর গন্ধ-বর্ণ সব কিছু মিলে যায়।
কেন দুধে ভেজাল না দিয়ে পুরো দুধটাই ভেজাল উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়?
এ প্রশ্নে এ ক্যাম্পের গবেষকরা বলেন, কৃত্রিম উপায়ে বানানো দুধ একদিনের বেশি টাটকা থাকে।কিন্তু ভেজাল দুধ এত দ্রুত নষ্ট হয় না। সে কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা এটি তৈরি করে দেশের যে কোনো প্রান্তে রফতানি করার সুযোগ নিয়ে থাকে।
ভেজাল দুধ ফুটিয়ে খেলেও তা ধরার উপায় নেই বলে জানান গবেষকরা। তা হলে কীভাবে চেনা যাবে ভেজাল দুধ! সে উপায়টিও জানিয়েছেন গবেষকরা।
তাদের দাবি, ভেজাল দুধে এক টুকরো সয়াবিন ফেলে দিলে ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোবে। এর কারণ রাসায়নিক বিক্রিয়া। ভেজাল দুধের উপকরণ কস্টিক সোডা আর সয়াবিনে থাকা উৎসেচক জারিত হয়ে অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করে। তাই ভেজাল দুধ থেকে ঝাঁঝালো গন্ধ বেরোতে থাকে।
দৈনিক যুগান্তর, ০৩ নভেম্বর, ২০১৮