চুল পড়ে যায় আর নতুন চুল গজায় অনেকের।। তবে অনেকের আবার চুল পড়ে মাথা একেবারে ফাঁকা হয়ে যায়। মাথার ত্বকের লোমকূপের কোনো সমস্যা, চুলের কোনো রোগ বা শরীরের অভ্যন্তরীণ কোনো সমস্যা থেকেই মাথা একেবারে ফাঁকা হয়। এক বলে টাক পড়া।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অ্যানাজেন দশার সময় কমে এবং দু’টি চক্রের মধ্যবর্তী সময় বাড়ে। তাই একজন প্রৌঢ় কখনো কিশোর বয়সের মতো চুলের ঘনত্ব আশা করতে পারেন না।
কোনো শারীরিক ব্যাধি যদি নাও থাকে তবু চুলের ঘনত্ব এক এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম। তবে যেকোনো বয়সেই ৯০ শতাংশ অ্যানাজেন ও ১০ শতাংশ টেলোজেন চুল থাকার কথা। ঋতু বিশেষে আবার এই ভাগও বদলে যায়।
আসুন জেনে নেই কেন টাক পড়ে ?
অ্যালোপেসিয়া
অ্যালোপেসিয়া তিন ধরনের হয়ে থাকে। তবে অধিকাংশ সময়ে যে টাক পড়া নিয়ে চর্চা শোনা যায় তা আসলে অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেসিয়া বা পুরুষসুলভ টাক পড়া। একটা বিশেষ আকৃতিতে মাথা ফাঁকা হতে শুরু করে। প্রথমে চুল উঠে কপালের দু’ধার প্রশস্ত হয়ে যায়। তার পরে মাথার উপরের দিকের চুল উঠতে থাকে।
অ্যান্ড্রোজেন হরমোন
অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের দ্বারা চুল ওঠা প্রভাবিত হয়ে থাকে। জন্ম থেকেই কোন কোন চুল এই হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হবে আর কোন চুল হবে না তা নির্দিষ্ট থাকে। এটা কিছুটা বংশগত। কাজেই কোনো বিশেষ তেল চুলে মাখার পর সব চুল উঠে গেল বলে অনেক সময় যা শোনা যায় তার ভিত্তি নেই।
বয়ঃসন্ধির পর
বয়ঃসন্ধির পর যখন অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বাড়তে থাকে তখন কোনও কোনও পুরুষের ওই সব অঞ্চলের চুলের গোড়া ক্রমশ ছোট ও সংকুচিত হতে হতে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে সেই লোমকূপগুলির আর কেশদণ্ড তৈরির ক্ষমতা থাকে না।
অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা
কিছু কিছু স্থানীয় অসুখ অর্থাৎ একান্তই চুলের সমস্যা, যেমন অ্যালোপেসিয়া এরিয়াটা বা অ্যালোপেসিয়া টোটালিস।
থাইরয়েড রোগ
কারো কারো ক্ষেত্রে টাক পড়া বড় সড় রোগের লক্ষণ মাত্র। যেমন, থাইরয়েড রোগে চুল উঠতে উঠতে মাথা ফাঁকা হয়ে যায়।
জন্ডিস, ডেঙ্গি, টাইফয়েড
যেকোনো বড় রোগে যেমন জন্ডিস, ডেঙ্গি, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগে আক্রান্তরা পুষ্টির সমস্যায় ভোগেন। ফলে চুল পর্যন্ত পুষ্টি না পৌঁছনোয় চুল পড়ে যায়।
আরও জানুন ঃ চুলের যত্নে আয়ুর্বেদ
সিস্টেমেটিক লুপাস
টাক পড়ে সিস্টেমেটিক লুপাস এরিথেমেটোসাস নামে এক মারাত্মক রোগেও।
পেটের রোগ
পেটের রোগেও অনেক সময়ে টাক পড়ে থাকে। আবার অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বা স্তন্যদায়িনী মায়েদেরও চুল উঠতে থাকে। কারণ তখন পুষ্টির ঘাটতি থাকে শরীরে।
অতিরিক্ত পরিমাণে চুল উঠলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ভাল। তা হলে চুল ওঠার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। উপযুক্ত চিকিৎসাও হয়। ভবিষ্যতে মাথা ফাঁকা হয়ে যাওয়া থেকে নিষ্কৃতি মেলে।
দৈনিক যুগান্তর, ১০ অগাস্ট ২০১৮