বাচ্চার ওপর চাপ নয়

0
33
টার্ম মুছে ফেলুন: বিরুদ্ধাচরণ বিরুদ্ধাচরণটার্ম মুছে ফেলুন: ‘স্ক্রিন’য়ে সময় কম দেওয়া ‘স্ক্রিন’য়ে সময় কম দেওয়াটার্ম মুছে ফেলুন: হাঁটতে বের হন হাঁটতে বের হনটার্ম মুছে ফেলুন: নিজেই হন ‘রোল মডেল’ নিজেই হন ‘রোল মডেল’টার্ম মুছে ফেলুন: আত্ম-নিভর্রশীলতা আত্ম-নিভর্রশীলতাটার্ম মুছে ফেলুন: আত্ম-সমালোচনা আত্ম-সমালোচনাটার্ম মুছে ফেলুন: যে কোনোভাবে জয়ী হওয়া যে কোনোভাবে জয়ী হওয়া
বাচ্চার ওপর চাপ নয়

হয়তবা আপনি একজন নিখুঁত অভিভাবক অথবা নিখুঁত থাকার জন্য সচেষ্ট থাকেন সবসময়। তবে এই ধরনের মনোভাব আপনার শিশুর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

শিশুবিষয়ক ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিখুঁত বাবা-মা শিশুকেও নিখুঁতভাবে তৈরি করে তোলার জন্য সবসময় সচেষ্ট থাকেন। অনেক কিছু চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কাজ করে; যা শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা দিয়ে বরং ভালোর চেয়ে খারাপই বেশি করে থাকে।

যে কোনোভাবে জয়ী হওয়া

সবসময় শিশুর কানের কাছে যদি এটাই বলতে থাকেন যে, তোমাকে জয়ী হতেই হবে, তাহলে এখনই সাবধান হোন। এতে সে হয়ত কয়েকবার জয়ী হবে এবং ভাবতে শুরু করবে যে সে জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই জয়ী হবে। তবে কোনো কারণে যদি সে হেরে যায় তাহলে অনেক বেশি খারাপ প্রভাব রাখবে। তাই, যদি আপনার শিশু সবসময় জয়ী না হয় অথবা পরাজয় মেনে নিতে না পারে তাহলে এটা তার মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। ফলে জীবনের চড়াই উতরাইয়ের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া তার জন্য বেশ কঠিন হয়ে যাবে।

আত্ম-সমালোচনা

নিখুঁত অভিভাবকদের আরেকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল আত্ম-সমালোচনা। তাদের সন্তান কখনও নিজের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারবে না। বরং সে তার কাজে অনেক বেশি বিশ্লেষণাত্মক হবে। ফলে জীবনের সব ক্ষেত্রে অসন্তুষ্টি নেমে আসবে।

আত্ম-নিভর্রশীলতা

সন্তান যদি বাবা-মা’র মনের ইচ্ছা পূরণে ব্যস্ত থাকে তাহলে সে আত্মনির্ভরশীলতা হারিয়ে ফেলবে। সন্তান যদি আত্মনিভরশীল না হয় তাহলে তাকে জীবনে অনেক কঠিন সময় কাটাতে হবে। তারা বিশ্বাস করবে যে তারা যা করছে তার কোনোটাই বাবা-মা’র জন্য যথেষ্ট নয়।

বিরুদ্ধাচরণ

ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর’য়ের এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, যেসব শিশুর বাবা-মা অনেক নিখুঁত তারা নানান উদ্বেগ ও মানসিক চাপে আক্রান্ত থাকে।

বাবা-মায়ের সকল কাজে নিখুঁত থাকার মনোভাব যদি সন্তানের উপরে পড়ে তাহলে চাইলেও সে তা এড়িয়ে যেতে পারবেনা। আর এই কারণেই সে সবসময় নিজের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে।

হয় মোবাইলে গেমস, নয়ত কার্টুন, নয়ত টেলিভিশন- বাসার ছোট্ট সদস্যের জীবনটা এই ডিজিটাল জগতেই আটকে আছে। তাই নড়াচড়া কম। ফলাফল ওজন বৃদ্ধি, চোখের চশমা আর আলসেমি। সমাধান একটাই, তা হল শারীরিক কসরত।

আর শিশুকে শারীরিকভাবে কর্মচঞ্চল রাখতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতেই পারে।

স্প্যানিশের ইউনিভার্সিটি অফ গ্রানাডা’র এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে জানানো হয়, শারীরিক পরিশ্রম শিশুদের মস্তিষ্কের ধূসর অংশ বাড়ায় যা তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গবেষকদের মতে, শারীরিক সুস্থতা বিশেষ করে, হৃদপিন্ডের সুস্থতা, গতি তৎপরতা ও পেশির সুস্থতা মস্তিষ্কের ধূসর অংশের উপর নির্ভর করে।

‘দা জার্নাল অব নিউরোইমেজ’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, শিশুর শিক্ষণ, কার্যকারিতা ও পড়াশুনার দক্ষতা মস্তিষ্কের ধূসর অংশের বৃদ্ধির সঙ্গে জড়িত। তাই শিশুকে ঘরে বসিয়ে নয়, বরং বড় করতে চাইলে শারীরিকভাবে সচল রাখাই শ্রেয়। আর এর জন্য উপায়ও রয়েছে।

শিশুকে খেলাধূলায় উৎসাহিত করুন: ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার, টেনিস অথবা কাবাডি যে কোনো খেলাতে শিশুকে উৎসাহিত করুন। খেলাধূলা শিশুকে ব্যস্ত ও কর্মক্ষম রাখে। তারা যখন খেলতে যায় তখন অনেক নতুন বন্ধুর সঙ্গে পরিচিত হয় এবং একে অপরের কাছে নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ পায়।

খেলাধূলা শিশুদের অনেক কিছু শিখতে সাহায্য করে যা পরবর্তীতে জীবনে অনেক কাজে লাগে যেমন- দলের কোনো জটিল সদস্যের সঙ্গে কাজ করা, অনেক চাপের মধ্যে কাজ করা, সে কি চায় তা মুখ ফুটে বলা এবং ধৈর্য ধরা ইত্যাদি।

নাচ

শারীরিক কসরতের সবচেয়ে মজার মাধ্যম হচ্ছে নৃত্য। এমনকি ব্যায়ামাগারে যেতে না চাইলেও বড়দের ক্ষেত্রেও নাচ হতে পারে ব্যায়ামে আগ্রহ বাড়ানোর অন্যতম মাধ্যম।

নাচের অঙ্গভঙ্গীর ফলে শারীরিক যে ভারসাম্যের সৃষ্টি হয় তা শিশুর স্মৃতিশক্তি, তেজ এবং সহিষ্ণুতা বাড়ায়। আর এক ঘণ্টার নাচ ভালো পরিমাণে ক্যালোরি পোড়ায়।

‘স্ক্রিন’য়ে সময় কম দেওয়া

স্কুল থেকে ফিরে শিশুকে টেলিভিশনের রিমোট, ল্যাপটপ বা মোবাইলের স্ক্রিনের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকতে দেবেন না। তারা যত বেশি সময় স্ক্রিনের মধ্যে আটকে থাকবে তত কম সময় পাবে বাইরে খেলার জন্য। শিশুর গ্যাজেট ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে দিন। তবে মনে রাখবেন কোনো কিছুর পুরস্কার স্বরূপ শিশুকে স্ক্রিন ব্যবহার করতে দেবেন না। স্ক্রিনের সামনে বসে আপনি বা আপনার শিশু খাওয়া দাওয়া করবেন না।

হাঁটতে বের হন

কাছালাছি কোথাও যেতে হলে শিশুকে নিয়ে হেঁটে যান। নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। সাধারণ গতিতে হাঁটা ১৫০ থেকে ২০০ ক্যালরি খরচ করতে সাহায্য করে। ফলে শিশুও নিজেকে স্বাধীন ও স্বতঃস্ফুর্ত অনুভব করবে এবং আপনাদের মধ্যে খুব ভালো সময়ও কাটবে।

নিজেই হন ‘রোল মডেল’

শিশু তার মায়ের কাছ থেকে শেখে। আপনি যদি একটি ব্যস্ত জীবনযাপন করেন তাহলে আপনার শিশুও সেটা শিখবে। অবসর সময় মোবাইল ফোনে ব্যয় না করে শিশুর সঙ্গে সময় কাটান। সম্ভব হলে, সন্তানের সঙ্গে বল, দড়ি-লাফ খেলুন অথবা আশপাশে বেড়াতে যান। সন্তান যখন আপনাকে ব্যস্ত দেখবে তখন সেও ‘ফিট’ থাকার জন্য চেষ্টা করবে।

দৈনিক জনকন্ট,২৯ জুলাই ২০১৮

 

LEAVE A REPLY